• বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন

ভাঙ্গায় নিজাম শেখের নেতৃত্বে জালিয়াতির রমরমা ব্যবসা

ইন্দোবাংলা ডেস্ক / ৭২ বার পাঠিত
প্রকাশিত: শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ভিসা, মাস্টার কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবার (বিকাশ-নগদ) মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেওড়া নয়াকান্দা গ্রামের নিজাম শেখ, যিনি এলাকায় কিশোর গ্যাং ও প্রশিক্ষিত প্রতারকদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন।

চক্রটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট নেটওয়ার্কের তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে জাল কার্ড তৈরি করে টাকা উত্তোলন করছে। একইসাথে, মোবাইল ব্যাংকিং হ্যাক করে সরকারি বিভিন্ন ভাতা ও উপবৃত্তির টাকাও আত্মসাৎ করছে তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজাম শেখের ডান হাত হিসেবে কাজ করছে টুটুল আকন্দ নামের এক ব্যক্তি। তিনি দক্ষিণ কালামৃধা গ্রামের মৃত মোখলেস আকন্দের ছেলে। এক সময়ের মাদক ব্যবসায়ী টুটুল বর্তমানে প্রতারণার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচিত।

চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে দেওড়া গ্রামের মিরাজুল, ফয়সাল চোকদার, কামাল হাওলাদার, ও জাকির মোল্লা সহ প্রায় অর্ধশত যুবক। অভিযোগ রয়েছে, নিজাম শেখ নিজ হাতে এলাকায় বেকার যুবকদের প্রতারণার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং একটি সঙ্ঘবদ্ধ কিশোর গ্যাংও পরিচালনা করছেন।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা সত্ত্বেও বারবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও রহস্যজনক কারণে কিছুদিন পরই ছাড়া পেয়ে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন নিজাম। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ২৫-৩০টি প্রতারণার মামলা রয়েছে।

সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা পুলিশের হাতে ইয়াবা ও প্রতারণার সরঞ্জামসহ গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গ্রেফতার হন তিনি। দুই মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে প্রতারণার নেটওয়ার্ক আরও সম্প্রসারিত করেন নিজাম।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিজাম শেখ এক সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেই ছত্রছায়ায় থেকেই তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় প্রতারণার স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নিজামের নেতৃত্বাধীন চক্র শুধু সাধারণ মানুষকেই নয়, বরং সরকারি সহায়তা কর্মসূচির অর্থ – যেমন বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা ও শিক্ষাবৃত্তির টাকা – হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভাতাভোগী ও বিভ্রান্ত হচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

এলাকাবাসী জানান, “এই চক্রটি এতটাই প্রভাবশালী যে কেউ মুখ খুললে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। মাঝে মাঝেই তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, আবার কিছুদিনের মধ্যে ফিরে এসে পুরনো রকমেই প্রতারণা শুরু করে।”

তারা অবিলম্বে নিজাম শেখ, টুটুল আকন্দসহ এই চক্রের সকল সদস্যদের গ্রেফতার এবং প্রতারণা চক্র নির্মূলে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি।


এই ক্যাটাগরির আরও খবর
https://slotbet.online/